‘অ্যালার্জি’ শব্দটির প্রতি অনেকেরই আলাদা আগ্রহ রয়েছে। অ্যালার্জির সঙ্গে নিজের জীবনযাত্রাকে একটু জড়িয়ে নিতে না পারলে বুঝি আর আধুনিক হওয়া গেল না! খাবারে অ্যালার্জির ক্ষেত্রে অনেকেই বলেন, চিংড়ি খেলেই অ্যালার্জি হতে পারে। বহুল প্রচলিত এ ধারণা ঠিক নয়। কেন ঠিক নয়, তা জানার আগে অ্যালার্জি নিয়েও একটু বিশদ জানা ভালো।
অ্যালার্জির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে অনেকেই তৎপর থাকেন! কিছু কিছু লোক আছেন, যাঁদের হরহামেশাই বলতে শোনা যায়—তাঁর এটাতে অ্যালার্জি, ওটাতে অ্যালার্জি। অ্যালার্জির অপবাদে দুষ্ট তেমনি কিছু খাদ্য উপকরণ হচ্ছে বেগুন, ডিম, চিংড়ি ইত্যাদি। এসব খাবার খেলে যে অ্যালার্জি হয় না, তা কিন্তু নয়। তবে এগুলো খেলেই যে সবার অ্যালার্জি হবে, এমন কোনো কথা নেই। খাবারে অ্যালার্জি নিয়ে বেশ ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত আছে।
অ্যালার্জি হলো বিশেষ কোনো বস্তুর প্রতি দেহের স্পর্শকাতরতা এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ। যেমন শরীর বা হাত-পা চুলকানি, ত্বক লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠা, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। অনেকেরই ধারণা, চিংড়ি মাছ খেলে অ্যালার্জি হতে পারে, এ ধারণা ভুল।
চিংড়ি খেলে অ্যালার্জি কারো কারো নিশ্চয়ই হয়, তবে সবার হয় না। অ্যালার্জির কারণ একেকজনের বেলায় একেক রকম হয়। কারো ধুলায় অ্যালার্জি, কারো রোদে, কারো ঠান্ডায়, কারো গরমে, কারো ডিমে, আবার কারো বেগুনে অ্যালার্জি। নানা ধরনের খাদ্যবস্তু থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। দুধ, মাছ, মাংস, ডিম থেকে শুরু করে অ্যালার্জি ভাতেও হতে পারে। কোন খাবারে কার অ্যালার্জি হবে, তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। আবার কোনো না কোনো খাবারের প্রতি যে কারো অ্যালার্জি থাকতে হবে, এমনটিও কথা নেই। এমন লোকও আছেন, যাঁদের কোনো খাবারের প্রতি অ্যালার্জি নেই।
কাজেই এ ক্ষেত্রে শুধু চিংড়িকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। চিংড়ি খেলে যাঁর অ্যালার্জি হয়, তিনি নিশ্চয়ই তা খাবেন না, আর যাঁদের হয় না তাঁরা মন চাইলেই খেতে পারেন।
অ্যালার্জি যে শুধু খাদ্যবস্তু থেকে হয়, তা নয়। পরিবেশ, ধুলাবালি, তাপমাত্রার হেরফের, ফুলের রেণু, কসমেটিকস, ওষুধ ইত্যাদি থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির কারণ জানার জন্য অ্যালার্জি পরীক্ষা করা যেতে পারে। অ্যালার্জির কারণ খুঁজে বের করার মাধ্যমে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। তবে শেষ কথা হচ্ছে, এমন কোনো খাদ্যবস্তু নেই, যা খেলে ঢালাওভাবে সবার অ্যালার্জি হবে। কাজেই চিংড়িতে অন্য কারো অ্যালার্জি হয়েছে বলে যে আপনারও অ্যালার্জি হবে, এমন ধারণা একেবারে ভুলে যান।.