মানুষের সবচেয়ে ক্ষতিকর ও বৃহৎ পরজীবীর নাম হল কৃমি। এটি মানুষের দেহে বাস করে, খাবার গ্রহণ করে বেঁচে থাকে আবার বংশ বৃদ্ধিও করে। শিশু কিশোরদের মাঝে কৃমির সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। তবে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ পান করা বাচ্চাদের কৃমি হয় না।
বর্ষার এই সময়টাতে কৃমির প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। এ সময় পানি আর কাঁদামাটিতে মিশে থাকে এই পরজীবী জীবাণু। তাই অন্য যেকোনো ঋতুর তুলনায় বর্ষায় খুব সহজেই কৃমির সংক্রমণ ঘটে। এছাড়াও অপরিষ্কার শাকসবজি ফলমূল, নোংরা খাবার, দূষিত পানি পানের মাধ্যমে কেঁচো কৃমির ডিম আমাদের মুখে প্রবেশ করে। আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড়, হাত-পা ঠিকমতো না ধুলে নখের মধ্যে বা আঙুলের ভাঁজে লেগে থাকা ডিম খাদ্যের মাধ্যমেও আমাদের পেটে চলে যায়।
একটা স্ত্রী কৃমি মানুষের অন্ত্রে দৈনিক প্রায় ২ লাখ ডিম পাড়ে। মাত্র ১০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ডিমের ভেতর বাচ্চা কৃমি তৈরি হয় এবং পরে তা মলের সঙ্গে নিষ্কাশন করে পুনরায় সেই মল থেকে খাদ্য বা অন্যান্য পর্যায়ে সুস্থ মানুষের পেটে প্রবেশ করে। সাধারণত কেঁচো কৃমির সংক্রমণে অনেক সময় প্রথম দিকে কিছু বোঝা যায় না। কিন্তু ধীরে ধীরে নানা রকম লক্ষণ দেখা দেয়।
অন্ত্রে বেশি কেঁচো কৃমি থাকলে অস্বস্তিভাব, পেটফাঁপা, পেট ফুলে ওঠা, বদহজম, ক্ষুধামন্দা বা অরুচি, বমি বমি ভাব, ওজন কমে যাওয়া, পাতলা পায়খানা, আমমিশ্রিত মল, শুকনো কাশি, শ্বাসপ্রশ্বাসে দুর্গন্ধ, যকৃত প্রদাহ ইত্যাদি হতে পারে।
কৃমির মারাত্মক উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে প্রত্যেকের প্রতি ৬ মাস অন্তর এক ডোজ মেবেন্ডাজল গ্রুপের ওষুধ খাওয়া উচিৎ। তবে বুকের দুধ পানকারী শিশুর প্রয়োজন হয়না। গর্ভবতী মায়ের জন্য কৃমি নাশক ওষুধের প্রয়োজন হয় না।.