নিজের অভিনয় দক্ষতার ববিতা শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সু্খ্যাতি অর্জন করেছেন। নিজের সাথে দেশের নামও বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজের সু-অভিনয়ের মাধ্যমে। ৭০ এবং ৮০’র দশকে জনপ্রিয় এই চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এপর্যন্ত ২৫০ টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
জন্ম
৩০ জুলাই ১৯৫৫ সালে বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রকৃত নাম ফরিদা আখতার (পপি)।
পারিবারিক জীবন
-
পিতার চাকুরী সুত্রে জন্ম বাগেরহাটে হলেও তাঁর পুরো শৈশব এবং কৈশোরের কিছু অংশ কেটেছে যশোরে।
-
ববিতার মা পেশায় একজন ডাক্তার ছিলেন।
-
বড় বোন সুচন্দা, ছোট বোন চম্পা এবং ভগ্নিপতি প্রয়াত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান।
-
ছোট বেলায় ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও বড় বোন সুচন্দার হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন ববিতা।
-
বর্তমানে তিনি গুলশানে বসবাস করছেন।
-
একমাত্র ছেলে অনীক কানাডায় পড়াশোনা করে।
অভিনয় জীবন
-
১৯৬৮ সালে “সংসার” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ববিতার অভিনয় জীবন শুরু। এই চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক রাজ রাজ্জাক ও সুচন্দার মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই সিনেমায় অভিনয়ের সময় তার নাম ছিল সুবর্ণা।
-
১৯৬৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “শেষ পর্যন্ত” চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন। এখান থেকে তিনি ববিতা নামে পরিচিত হতে থাকেন।
-
গ্রামীণ কিশোরী বধূ কিংবা শহুরে আধুনিক মেয়ের চরিত্রে বেশ সাবলীলভাবে অভিনয় করেছেন ববিতা।
-
তাঁর সময় তরুণীদের কাছে ফ্যাশনের অপর নাম ছিল ববিতা।
-
জহির রায়হান পরিচালিত “টাকা আনা পাই” চলচ্চিত্র তাঁর অভিনয় জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।
-
ববিতার জীবনের প্রথম সুপারহিট চলচ্চিত্র নজরুল ইসলাম পরিচালিত “স্বরলিপি”।
-
ভারতের সত্যজিৎ রায় পরিচালিত “অশানি সংকেত” ববিতার অভিনয় জীবনের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রে তিনি “অনঙ্গ বউ” চরিত্রে অভিনয় ব্যাপক সাড়া ফেলে দেন।
-
ববর্তমান সময়ে ববিতা চলচ্চিত্রে নায়ক বা নায়িকার মা বা ভাবির চরিত্রে অভিনয় করছেন।
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
-
সংসার
-
শেষ পর্যন্ত
-
অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী
-
আলোর মিছিল
-
গোলাপী এখন ট্রেনে
-
টাকা আনা পাই
-
নয়ন মণি
-
অনন্ত প্রেম
-
এক মুঠো ভাত
-
জন্ম থেকে জলছি
-
চন্ডীদাস ও রজকিনী
-
অশনি সংকেত
-
রামের সুমতি
-
নিশান
-
নাগ-নাগিনী
-
লাভ ইন সিঙ্গাপুর
-
লাইলি মজনু
-
প্রতিহিংসা
-
নাগ পূর্ণিমা
-
স্বরলিপি
-
শ্বশুরবাড়ি
-
মিস লংকা
-
জীবন পরীক্ষা
-
জীবন সংসার
|
|
|
উল্লেখযোগ্য পুরুস্কার
-
বাদী থেকে বেগম (১৯৭৫), নয়নমণি (১৯৭৬), বসুন্ধরা (১৯৭৭), রামের সুমতি (১৯৮৫) এবং পোকামাকড়ের ঘর বসতি (১৯৯৬) চলচ্চিত্রগুলোর জন্য মোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন ববিতা।
-
সত্যজিতৎ রায় পরিচালিত “অশানি সংকেত” চলচ্চিত্রে সু-অভিনয়ের জন্য ববিতা ১৯৭৩ ভারতে বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি অর্জন করেন।
-
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি থেকে ৪ বার, নন্দিনী চলচ্চিত্রের জন্য পাকিস্তানের জাতীয় চলচ্চিত্র পদক এবং ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমালোচক পুরুস্কার অর্জন করেন ববিতা।
বিশেষ কর্মকান্ড
-
ববিতা বর্তমানে ডিসট্রেস চিলড্রেন এ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশানল (ডিসিআইআই) এর শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন।
-
সংগঠনটি উন্নয়নশীল দেশের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের পড়াশোনা, চিকিৎসা এবং ভবিষ্যত গড়ার ব্যাপারে কাজ করে চলেছে।