মালপত্র টানার কাজে সুপ্রাচীনকাল থেকে গাধার ব্যবহার হয়ে আসছে এই তথ্য আমাদের সবারই কমবেশি জানা আছে। কিন্তু যদি বলা হয় গাধার দুধের পনির খেয়েছেন, তাহলে অনেকেরই বিস্ময়ের সীমা থাকবেনা।
হ্যা, গাধার দুধ থেকেও চিজ বা পনির তৈরি হয় এটা জানার পর যে কেউই বিস্মিত হতে পারেন। আবার এটা শুনে নাকও সিঁটকোতে পারেন। তবে এই বিশেষ ধরনের চিজটির গুণগ্রাহীতা রয়েছে সারা বিশ্বে।
এখানেই শেষ নয়, এর দাম শুনলে আরো বেশি অবাক হবেন। এক পাউন্ড পনিরের দাম পড়বে এক হাজার মার্কিন ডলার!
বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
এই বিশেষ ধরনের চিজকে পিউল চিজ বলা হয়। একমাত্র সার্বিয়ায় এই চিজ তৈরি করা হয়। কারণ, এ দেশের বালকান প্রদেশে যে প্রজাতির গাধা পাওয়া যায় তাদের দুধ থেকেই এই চিজ তৈরি করা সম্ভব হয়।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এত বেশি দাম হওয়ার কারণ কী?
তিন বেলা এই গাধাদের দুধ দোয়াতে হয়। ১৫টি গাধা থেকে মাত্র এক গ্যালন দুধ মেলে। আর এক পাউন্ড চিজ বানাতে প্রায় সাড়ে তিন গ্যালন দুধ লাগে। ফলে দাম আকাশ ছোঁয়া না হয়ে পারে ?
এছাড়া সার্বিয়ার জাসাভিয়া স্পেশাল নেচার প্রিজার্ভের ফার্মে যে পরিমাণ গাধার দুধ মেলে তা থেকে সারা বছরে ২০০ পাউন্ড পিউল চিজ বানানো যায়। যা মানুষের চাহিদার তুলনায় খুবই কম।
আগে সার্বিয়ায় গাধা মালপত্র বহন করার জন্য ব্যবহৃত হত। তবে বর্তমান ট্রান্সপোর্টের সুবিধার কারণে পিছিয়ে পড়েছে গাধারা। অনেকে খরচ কমানোর জন্য নির্বিচারে এদের হত্যাও করেছেন। অনেকে আবার জাসাভিয়া ফরেস্টে গিয়ে ছেড়ে দিয়ে আসেন। সেখানেই এই গাধাদের বংশবৃদ্ধি হয়। তবে পিউল চিজের এত কদর সুপ্রাচিনকাল থেকে ছিল না।এর সূত্রপাত হয় ২০১২ সালে। হঠাৎ এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, সার্বিয়ার টেনিস স্টার নোভাক জকোভিচ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বছরের যত পিউল চিজ তৈরি হয়েছিল সবটাই কিনে ফেলেছেন। যদিও সেটা গুজবই ছিল। তবে এর জেরেই চিজের দাম একলাফে আকাশ ছোঁয়া হয়ে যায়। পাউন্ড প্রতি দাম প্রায় দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যায়।