চারিদিকে ধু ধু মরু প্রান্তর। মাঝে মধ্যেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দু’চারটি গাছ। যার প্রত্যেকটি ডালে বিচরণ করছে বেশ কিছু ছাগল।
ভাবছেন যে মরুভুমির কোনো মরিচীকার কথা বলছি?
না,অবিশ্বাস্য হলেও সত্যিই বিচিত্র এই ঘটনাটি ঘটছে মরক্কোয়। এরা পাতা ও ফল খেয়ে পাল্টে দিচ্ছে পুরো গাছের চেহারা। এখানে, বিভিন্ন এলাকায় থাকা অরগান নামের বৃক্ষে আরোহণ করছে ছাগল। এর পাতা ও ফল ছাগলের খুব সুস্বাদু খাবার হওয়ায়, বছরের পর বছর ঘটছে এই ঘটনা।
অরগান গাছ দেখতে অনেকটা অলিভ গাছের মতো। প্রচন্ড গরমে যখন মরুভূমিতে উদ্ভিজ্জ প্রাণের পরিমাণ কমে আসে, ছাগলের জন্য পর্যাপ্ত খাবারের অভাব দেখা দেয়।
তখন বেচে থাকার তাগিদে তাদের নজর যায়, উঁচু গাছের দিকে। তারা চেষ্টা করতে থাকে গাছে চড়ে প্রয়োজনীয় খাবার সংগ্রহের। ব্যর্থ হতে হতে তারা একটি সময় সফল হয় অরগান গাছের আরোহণে।
জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার এ কৌশল আয়ত্তকরণের ফলে, তারা অনায়াসেই আরোহণ করতে পারে অরগান গাছের চূড়ায়। আর তাই দল বেধে ছাগলের গাছে আরোহণের এই দৃশ্য এখানে দেখা যায় হরহামেশাই।
অরগান ফলের ভেতর বাদামের মতো একটি বিচি থাকে, যা ছাগলের পেটে সহজে হজম হয় না। জাবর কাটার সময় বিচি গুলো বের করে দেয় তারা। কৃষকেরা এই বিচিগুলো সংগ্রহ করে, কারণ এ থেকে বিশেষ এক ধরনের তেল হয়, যা দিয়ে রান্না ও প্রসাধনী তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয়।
শরীরের বার্ধক্যরোধ ও দৈহিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাপী অরগান তেলের চাহিদা ব্যাপক। এ কারণেই বাজারজাতকারীরা এই তেল সংগ্রহের জন্য ছাগলদের অরগান গাছে আরোহণের সুযোগ করে দিচ্ছে।তবে, অরগান গাছে ছাগলের এই আরোহণের ফলে, দিন কে দিন কমে যাচ্ছে এই গাছের সংখ্যা।
তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যাতে অরগান গাছ রক্ষা এবং ছাগলের আহারের ব্যবস্থা দুটিই যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়।