আপনি জানেন কি ‘মি. বাংলাদেশ’ নামে একজন গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডজয়ী আমেরিকান রেকর্ড প্রডিউসার আছেন? শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও, এমন একজনের অস্তিত্ব সত্যিই রয়েছে। তবে বেশির ভাগ বাংলাদেশী তার নাম এর আগে শুনেছেন বলে মনে হয় না। মার্কিন রেকর্ড প্রডিউসার ও র্যাপার শোন্ড্রাএ ক্রফোর্ডকে তার ভক্তরা চেনে ‘বাংলাদেশ’ বা ‘মি. বাংলাদেশ’ নামে! রেকর্ড প্রডিউসার হিসেবে তার পরিচিতি বেশি হলেও, ডিস্ক জকি (ডিজে) ও র্যাপার হিসেবেও খ্যাতি আছে তার। গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডজয়ী এ মার্কিন রেকর্ড প্রডিউসারের জন্ম ১৯৭৮ সালের ১৪ই মার্চ। বাস করেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার আটলান্টায়। ১৯৯৮ সালে শুরু হয় তার সংগীত ক্যারিয়ার। কিন্তু ২০০০ সালের পূর্ব পর্যন্ত তিনি বড় কোন সাফল্য পান নি। সে বছর বিখ্যাত সংগীত শিল্পী লুদাক্রিস সহ তার সৃষ্টি হোয়্যাট’স ইয়্যোর ফ্যান্টাসি গানটি বড় ধরনের সাফল্য পায়। সে-ই শুরু, আর পেছনে তাকাতে হয় নি। লুদাক্রিসের সঙ্গে এরপর বহুবার কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু ‘বাংলাদেশ’ নামটিই কেন শোন্ড্রাএ ক্রফোর্ড তার ছদ্মনাম হিসেবে বেছে নিলেন? এ প্রশ্নের উত্তর তার প্রায় সব ভক্তদেরই। ক্রফোর্ডের মতে, তার কীবোর্ড-কেন্দ্রিক সংগীত প্রযোজনার শৈলী অনেকটা বাংলাদেশের মতো! তার ভাষায়, এটি বাংলাদেশ। এ নামের কোন কারণ নেই। আমরা বন্ধুরা মিলে মজা করতাম বাংলাদেশ নিয়ে।
একদিন আমি ঘুম থেকে উঠে ভাবলাম, আমি আমার ছদ্মনাম দেব বাংলাদেশ। সম্ভবত ২০০২ সালের দিকের ঘটনা। একদিন একটি গান নিয়ে কাজ করছিলাম, হঠাৎ করে আমি বলে উঠলাম ‘বাংলাদেশ’। এরপর থেকে আমার প্রতিটি বিটে আমি শব্দটিকে রেখেছি, এটি বেশ ‘কুল’ একটি শব্দ। শব্দটি শুনতে বিদেশী মনে হয়!
বহু জনপ্রিয় গানের পেছনের কারিগর এ সংগীত প্রযোজক। মি. বাংলাদেশ কাজ করেছেন বহু বিশ্ববিখ্যাত সংগীত শিল্পীর সঙ্গে। লি ওয়েনের সঙ্গে তার সম্মিলিত চেষ্টার ফল ‘অ্যা মিল্লি’ গানটি, যেটি ক্রফোর্ডের ক্যারিয়ারের অন্যতম সফল গান। গুচ্চি মানের ‘লেমোনাদে’ গানটির পেছনে অবদান ছিল তারও। পরে গানটি এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে, ইয়েলাওলফ, কারেন্সি, টাইলর দ্য ক্রিয়েটর ও আর্ল সুইটশার্ট এবং বিগ সিন গানটি নিজেদের মতো করে রিমিক্স করেছে বা গেয়েছে। ২০১১ সালে লি ওয়েনের জনপ্রিয় গান ‘সিক্স ফুট সেভেন ফুট’ গানটিও প্রযোজনা করেছেন তিনি। লুদাক্রিস, লি ওয়েন ছাড়াও মি. বাংলাদেশ কাজ করেছেন বিয়োন্সে, এমিনেম, জাস্টিন বিবার, সাইলিনা, জনসন কেশা, উশার, নিকি মিনেজ, টি-পেইন, ব্যাড মিটস এভিল, আইস কিউব সহ বহু বিশ্ববিখ্যাত শিল্পীর সঙ্গে। রিহানার সঙ্গে তার কাজ করা টক দ্যাট টক গানটিও পেয়েছে শ্রোতাপ্রিয়তা।